Mughal Empire | মুঘল আমল | সাধারণ জ্ঞান - বাংলা

Posted on 23rd Aug 2022 10:30:30 PM General Knowledge


বাবর: ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা মির্জা জহিরউদ্দিন মুহাম্মদ বাবর (Mīrzā Zahīr ud-Dīn Muhammad) ১৫২৬ খ্রি. ১২ এপ্রিল পানিপথের প্রথম যুদ্ধে পাঞ্জাবের শাসনকর্তা ইব্রাহিম লোদিকে পরাজিত ও নিহত করে ভারতবর্ষে মুঘল সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর জন্ম ১৪৮৩ খ্রি. ১৪ ফেব্রুয়ারি। তিনি ১৫৩০ খ্রি. ২৬ ডিসেম্বর মারা যান। বাবরের লেখা আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ ‘বাবরনামা’ (Baburnama)। বাবরের মৃত্যুর পরে নাসিরুদ্দিন মুহাম্মদ হুমায়ুন দিল্লীর সম্রাট হন (১৫৩০-১৫৪০ খ্রি.)। তার সমাধিস্থল বাগ-ই-বাবর। স্ত্রীগণ হচ্ছেন- আয়েশাহ সুলতান বেগম, বিবি মুবারিকা ইউসুফযায়, দিলদার বেগম, গুলনার আগাচেহ, গুলরুখ বেগম, মাহাম বেগম, মাসুমাহ বেগম, নারগুল আগাচেহ, সাদিয়া আফাক। ছেলের নাম- মির্জা হুমায়ুন, কামরান মির্জা, আসকারি মির্জা, হিন্দাল মির্জা, বারবুল মির্জা, ফারুক মির্জা, শাহরুখ মির্জা, সুলতান আহমদ মির্জা, আলোয়ার মির্জা। মেয়ের নাম- গুলবদন বেগম, মেহেরজান বেগম, ঈশান বেগম, মাসুমা বেগম, গুলগাদার বেগম, গুলরঙ বেগম, গুলচেহারা বেগম।

শের শাহ (Sher Shah): ১৫৩৯ খ্রি. শেরখান চৌসার যুদ্ধে হুমায়ুনকে পরাজিত করে ‘শেরশাহ’ উপাধি ধারণ করে বিহারের সুলতান হন। ১৫৪০ খ্রি. তিনি বাংলা দখল করলে বাংলায় স্বাধীন সুলতানী আমলের অবসান ঘটে এবং একই বছর (১৫৪০ খ্রি.) বাদশা হুমায়ুনকে পরাজিত করে দিল্লী অধিকার করেন। তিনি সোনারগাঁ থেকে লাহোর পর্যন্ত ৪৮৩০ কি.মি. সড়ক-ই-আয়ম নির্মাণ করেন যাহা পরবর্তীতে ইংরেজরা গ্রান্ড ট্র্যাক রোড নামকরণ করে। শেরশাহ উপমহাদেশে সর্বপ্রথম ঘোড়ার পিঠে ডাকের ব্যবস্থা প্রচলন করেন এবং দাম নামক রূপার মুদ্রার প্রচলন করেন।

পাট্টা: কৃষকগণ তাদের অধিকার ও দায়িত্ব বর্ণনা করে সরকারকে কবুলিয়াত নামে দলিল দিত এবং সরকার জমির উপর জনগণের স্বত্ত্বা স্বীকার করে কৃষকদের পাট্টা দিত।

সম্রাট জালালুদ্দিন মুহাম্মদ আকবর (১৫৫৬-১৬০৫ খ্রি.): ১৫৫৬ খ্রি. ২১ মার্চ ১৩ বছর বয়সে আকবর দিল্লীর সম্রাট হন। হুমায়ুনের মৃত্যুর পরে বৈরাম খা আকবরের রাজ প্রতিনিধি নিযুক্ত হন। এজন্য আকবর তাকে খান-ই-বাবা বা (Lord Father) বলে ডাকতেন। আকবরের সমাধিস্থল সেকেন্দ্রায়। তার স্ত্রীর নাম- মরিয়ম-উজ-জামানি বেগম, রুকাইয়া সুলতান বেগম, সেলিমা সুলতান বেগম, বেগম রাজ কানয়ারি বাই, বেগম নাথি বাই, কুশমিয়া বানু বেগম, বিবি দৌলত শাদ বেগম, রাজিয়া সুলতান বেগম। ছেলে- হাসান, হুসাইন, জাহাঙ্গীর, মুরাদ, দানিয়াল; মেয়ে- আরাম বানু বেগম, শাকার-উন-নিসা বেগম, শেহজাদী খানুম।

আকবর অমুসলিমদের উপর থেকে তীর্থ কর এবং জিজিয়া (Jizya) কর রহিত করেন। তিনি ১৫৮২ খ্রি. সকল ধর্মের সার সম্বলিত দীন-ই-ইলাহী (Din-i Ilahi) নামক একেশ্বরবাদ ধর্ম চালু করেন।

আকবরের রাজসভার কবি ছিলেন আবুল ফজল। তার বিখ্যাত গ্রন্থ আইন-ই-আকবরী। রাজস্ব মন্ত্রী টোডরমল, কৌতুককার বীরবল এবং গায়ন তানসেন। তানসেনকে বুলবুল-ই-হিন্দ বলা হত।

আকবরের নির্দেশে আমীর ফতেহুলল্লাহ সিরাজী আকবরের সিংহাসনে আরোহণের দিন ২১ মার্চ ১৫৫৬ খ্রি. প্রথম বাংলা নববর্ষ ধরে বাংলা সনের প্রবর্তন করেন এবং ১০ মার্চ ১৫৮৪ খ্রি. থেকে বাংলা সন কার্যকর করা হয়।

Prince of Builder নামে খ্যাত মুঘল সম্রাট শাহজাহান। তিনি আগ্রার তাজমহল, ময়ূর সিংহাসন এবং লাহোরের সালিমার উদ্যান, দিল্লীর লালকেল্লা ও জামে মসজিদ এবং আগ্রার মতি মসজিদ তৈরি করেন।

সম্রাট জাহাঙ্গীরের (সেলিম) আত্মীজীবনীমূলক গ্রন্থ তুজুক-ই-জাহাঙ্গীরী বা তুজুক-ঈ-জাহাঙ্গীরী বা তুজুক-এ-জাহাঙ্গিরী (Tuzuk-e-Jahangiri or Tuzuk-i-Jahangiri or Jahangir-nama)। তার স্ত্রীর নাম নূরজাহান (বাল্য নাম মেহেরুননেসা)।

শাহজাহানের পুত্র আওরঙ্গজেবকে জিন্দাপীর বলা হত। তিনি জিজিয়া কর পুনঃস্থাপন করেন। যোগ্যতার স্বীকৃতিস্বরূপ শাহজাহান তাকে আলমগীর নামক তরবারী প্রদান করেন। সুবেদার ইসলাম খান ১৬১০ খ্রি. ঢাকায় রাজধানী স্থাপন করেন।

সম্রাট শাহজাহানের প্রধানমন্ত্রী আসফ খানের পুত্র মীর্জা আবু তালেব খান (শায়েস্তা খান) তার মেয়ে ইরান দুখত (পরিবিবি) ১৬৪৮ খ্রি. মারা গেলে লালবাগের কেল্লার সামনে এক গম্বুজওয়ালা কারুকাজমন্ডিত পরিবিবি মাজার তৈরি করেন। শায়েস্তা খান ১৬৬৪ খ্রি. বাংলার সুবেদার নিযুক্ত হয়ে ঢাকা আসেন এবং ২য় বার বাংলার সুবেদার হন ১৬৭৮ খ্রি.। তিনি মোট ২৪ বছর বাংলায় থাকেন। এগারসিন্ধু দূর্গ কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া এবং এটি তৈরি করেন ঈশা খা।

সম্রাট অওরঙ্গজেবের তৃতীয় পুত্র শাহ মোহাম্মদ আযম ১৬৭৮ খ্রি. ঢাকার লালবাগের কেল্লা নির্মাণ করে নামকরণ করেন কিল্লা আওরঙ্গবাদ। তিনি লালবাগের শাহী মসজিদ নির্মাণ করেন।